সরিষা তেলের সেকাল-একাল
শিশু বয়সে স্কুলে যাওয়ার আগে কিংবা গোসলের আগে সরিষার তেল গায়ে মাখিয়ে দিতেন মা। মুখে তেল দেয়ার সময় চোখে লাগলে চোখ জ্বলে পানি পড়তো তখন। সরিষার তেলে রান্না খাবারের স্বাদ ও ঘ্রাণও ছিলো মনে রাখার মতো। সময় পেরিয়েছে, আধুনিকতার ছোয়ায় পরিবর্তন এসেছে তেলের ব্যবহারে। শরীরে তেলের ব্যবহার কমেছে উল্লেখযোগ্য ভাবে।
সয়াবিন তেলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি
স্বাধীনতার আগে থেকেই সয়াবিন তেল আমদানি করা হলেও তা পরিমাণে ছিলো খুবই কম। শহর এলাকায়ই সীমিত ছিল সয়াবিন তেলের বেচাকেনা। সে সময় ভোজ্যতেলের মধ্যে সরিষার তেলের ব্যবহার ছিল ৮০ শতাংশ। সরিষার পর বিদেশি তেল হিসেবে অলিভ অয়েল, সূর্যমুখী তেল, ক্যানোলা অয়েল ছাড়াও আমাদের দেশে ধানের কুঁড়া থেকে তৈরি তেল ইত্যাদি নানা ধরনের তেল বাজারে এলেও এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি রান্নাঘরের রাজা সয়াবিন তেল। সয়াবিন তেল ছাড়া যেনো রান্নার কথা ভাবতেই পারেন না আমাদের দেশের গৃহিণীরা।
অথচ আমরা জানি শরীরের স্থূলতা বৃদ্ধি বা অতিরিক্ত মেদভূড়ির জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী সয়াবিন তেল। আপনি স্বাস্থ্যবান থাকবেন একই সাথে সয়াবিন তেল খাবেন এ দুটো পরস্পরবিরোধী।
অতিরিক্ত সয়াবিন তেলজাতীয় খাবার গ্রহণ করলে লিভারে কোলেস্টেরল জমে যায়, যা থেকে হতে পারে লিভার সিরোসিস। এছাড়াও ক্যানসার, ডায়াবেটিস ও হৃদ রোগের ঝুঁকি বাড়ায় সয়াবিন তেল।
এতো স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হওয়া স্বত্ত্বেও তুলনামূলক সস্তা হওয়ায় রান্নার তেল হিসেবে আমরা নিয়মিত ব্যবহার করছি সয়াবিন তেল।
সরিষার তেলের স্বাস্থ্য উপকারিতা
গবেষণা বলছে আমাদের দেশে উৎপাদিত সরিষার তেলে গ্লুকোসিনোলেট থাকায় সরিষার তেল ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
এছাড়াও এই তেল ত্বকের কালো দাগ দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। সরিষার তেল চুলে ব্যবহারের ফলে চুলের গোড়া মজবুত হয় ও চুলকে কালো করতে সাহায্য করে।
অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং ছত্রাক প্রতিরোধক উপাদান থাকায় নানাবিধ রোগের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করা ছাড়াও গ্যাস্ট্রিক ও বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে সরিষার তেল। সরিষার তেলে প্রচুর ভিটামিন-ই থাকায় এই তেল গায়ে মাখলে ত্বক সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি এবং অন্যান্য দূষিত পদার্থ থেকে সুরক্ষিত থাকে। সরিষার তেলে থাকা আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট শরীরে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে দেয়।
ঠান্ডা লাগার কারণে বুকে কফ জমলে সরিষার তেল দিয়ে মালিশ করলে বুকের কফ দূর হয়ে যায়। ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বুকে বা পায়ের তলায় সরিষার তেল মালিশ করলে তা ঠান্ডা ও সর্দির বিরুদ্ধে খুবই কার্যকর ভূমিকা রাখে।
ভালো সরিষার তেল কোথায় পাবো
বাজারের সাধারণ সরিষার তেল এসব স্বাস্থ্য উপকারিতার চেয়ে বরং ক্ষতিই বেশি করে। মেশিনের প্রেশারে তেল বের করার ফলে সরিষার পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। তাতে সয়াবিন এড়িয়ে সরিষা তেল খাওয়ার উদ্দেশ্য ব্যহত হয়। আর এসকল পুষ্টিগুণ বজায় থাকে এমন তেল ব্যবহার করতে হলে নিতে হবে কাঠের ঘানি ভাঙা দেশি সরিষার তেল, যে তেলে অক্ষুণ্ণ থাকে সরিষার সকল পুষ্টিগুণ।
আজকাল ভেজালের ভীড়ে খাঁটি পণ্য পাওয়া বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই জনস্বাস্থ্যের দিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশের বিশ্বস্ত ইকমার্স সাইট ভিটালিক্স সরবরাহ করছে কাঠের ঘানিতে ভাঙানো শতভাগ দেশি সরিষার তেল, যা একই সাথে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও স্বাদে অতুলনীয়।
এই খাঁটি সরিষার তেলের ঝাঁঝ ঘরে বসে হোম ডেলিভারি পেতে ম্যাসেজ দিন এখানে: m.me/VITALIXbd